ছুঁয়ে জোছনার ছায়া


ছুঁয়ে জোছনার ছায়া

হটাত কিসের রিনিঝিনি আওয়াজে ঘুম টা ভেঙ্গে গেল, এতরাতে এই আওয়াজ টা কোত্থেকে আসবে বুঝলাম না, নিজেকে আবিস্কার করলাম সোফাতে, মোবাইলে সময় দেখলাম ০১.০০ টা বাজে। সন্ধ্যায় ওর সাথে একটু রাগারাগি হয়েছিল, আর আমি ফিরেছিও দেরি করে, আর সোফাতে বসে বসে ল্যাপটপে কাজ করতে করতে দেখি কখন ঘুমালাম নিজেই জানিনা। বাইরে দেখছি অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছে।
আওয়াজ টা আবার পেলাম, ঐটা তো আমাদের রুম থেকে আসছে, উঁকি দিয়ে দেখলাম আমার রুমের ড্রেসিং টেবিল এর সামনে এক নীল পরী সাজছে, আর আওয়াজ টা পরীটার হাতের চুড়ি থেকেই আসছে।
নিধিয়া, আমার বউ। ও চুড়ি পড়তে প্রচণ্ড ভালবাসে, সেই তখন থেকেই। আজও হাত ভর্তি চুড়ি দিয়েছে। কারন কি বুঝলাম না, আমি কি গিয়ে জানতে চাইব। না থাক দেখি কি করে, আমি আস্তে করে আবার সোফাতে ঘুমের ভান করে পড়ে রইলাম। এর একটু পর দেখি ও ড্রয়িং রুমে আসল, আমার দিকেই তো আসছে দেখলাম। আমি ঘুম কিনা বুঝার চেষ্টা করল হয়ত। কিছুক্ষন চুপচাপ দাড়িয়ে ছিল এরপর চলে গেল।
কিছুক্ষন হয়ে গেল কিন্তু ওর কোন সাড়াশব্দ নেই ব্যাপার কি, উঠে রুমে গেলাম দেখি ও নেই, ওয়াস রুম দেখলাম সেখানেও নেই। বুঝলাম না কই গেল। ওহ পুরা ব্যাপারটাই খোলাসা হয়ে গেল, এতক্ষনে বুঝলাম নিধিয়া কেন নীল শাড়ি পড়ে সেজেছিল। ফ্রিজ থেকে প্যাকেট টা নিলাম, আর আস্তে আস্তে ও যেইখানে গেছে আমিও ওইখানেই গেলাম, হ্যা নিধিয়া ছাদেই গিয়েছে।
বিয়ের আগে থেকেই ও বৃষ্টি পাগল, বৃষ্টি দেখলেই নিধিয়ার ভেজার ইচ্ছে হত। আর তাই ও কখনই ছাতা নিয়ে বের হত না। আর আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে ওর এক বৃষ্টি ভেজা ছবি দেখেই আমি ওর জন্যে পাগল হয়ে গিয়েছিলাম,,, অনেকদিন পিছে ঘুরার পর তারপর ওর সময় হয়েছিল আমার মনের কথা শুনার। সেই থেকে একসাথে আমরা, সবসময় চেয়েছি নিজের সবটুকু দিয়ে আমার ভালবাসার নীল পরীটাকে আগলে রাখতে।
ছাদে উঠে দেখি ছাদের এক কোনায় চুপচাপ দাড়িয়ে নিধিয়া, আস্তে আস্তে চুপচাপ ও না বুঝে সেইভাবে ওর পিছে গিয়ে দাঁড়ালাম, কিন্তু এ কি ও দেখি কাদছে !! !
আমি – কি ব্যাপার তুমি কাঁদছ কেন?
নিধিয়া - কই না তো, কাদছি না আমি, তোমার ঘুম ভাঙল কখন?
আমি – আগে বল কাঁদছ কেন ? তোমাকে না বলেছি কখনও কোনদিন কাঁদবে না, আমি থাকতে যদি তুমি কাদ তাহলে আমার আর থেকে কি লাভ। আর হ্যা সন্ধ্যার জন্যে সরি , আসলে অফিসের ঝামেলায় মেজাজ খারাপ ছিল, প্লিজ মাফ করে দাও লক্ষ্মীটি। প্লিজ।
নিধিয়া – আরেহ সেই কারনে না তো। শুধু শুধু মাফ চাইছ কেন?
আমি – তাইলে বল কেন কাঁদছ????
নিধিয়া – আরেহ এমনেই। কোন কারন নেই।
আমি – তাইলে সত্যিই বলবেনা তুমি?
নিধিয়া – আচ্ছা, আমাদের বিয়ের পর থেকে আমি কোনদিন তোমাকে ছাড়া রাতে বৃষ্টি তে ভিজেছি বল? তোমাকে ছাড়া ভিজতে কেমন যেন লাগছিল।
আমি – ওহ এই ব্যাপার, তা আমার সামনে দাড়িয়ে ছিলে কিন্তু আমাকে ডাকলে না কেন?
নিধিয়া – মানে? তুমি জেগে ছিলে? আমি তো ভাবলাম ঘুমাচ্ছ, তাই আর ডিস্টার্ব করি নি।
আমি – আমি আরও আগ থেকে জেগে ছিলাম, আর আজকাল আমাকে তুমি ডিস্টার্ব ও কর দেখছি, ভালোই তো।
ও কিছুই বলল না, চুপচাপ আমার বুকে মাথা দিয়ে বৃষ্টি তে ভিজছিল, তখন আমার পিছনে লুকানো প্যাকেট টা ওর সামনে দিলাম। ও খুশিতে লাফ দিয়ে উঠল। আসলে ও বৃষ্টি তে ভিজে আইস্ক্রিম খেতে খুব বেশি পছন্দ করে, আর আজ ওর রাগ ভাঙ্গানর জন্যে আসার সময় আইস্ক্রিম নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু আমি এসে দেখি ও ঘুমিয়ে পড়েছে, তাই ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম।
ও দেখি দুইহাতে দুইটা নিয়ে খাওয়া শুরু করল।
নিধিয়া – তোমার লোভ লাগছে? খাবে? আচ্ছা এই তুমি কিভাবে জানতে আজ আমি বৃষ্টি তে ভিজব?
আমি – তোমার জামাই না জেনে কে জানবে বল?
নিধিয়া – হুম আমার জামাই তাই তো সন্ধ্যায় আমার সাথে রাগারাগি করেছেন। হুহ।
আমি – আরেহ বাবা সরি তো, এই কানে ধরলাম আর হবে না।
নিধিয়া – হুম হাত টা কানে রেখে এবার হা কর? **** এর এই আইস্ক্রিম টা অনেক মজার তাই না?
আমি – হুম, কিন্তু তোমার ঠোটের পাশে লেগে থাকা আইস্ক্রিম টা মনে হয় আরও একটু বেশি ই মজা হবে।
নিধিয়া – যাহ দুষ্টু।দূরে যাও আমার দূরে যাও।
এরপরের সময়গুলো একান্তই আমাদের ওইগুলা নাইবা জানলেন।
আসলে আমার মনে হয় মাঝরাতের বৃষ্টি টা আসলে মান ভাঙ্গানোর জল। 
১. মরিয়ম বেগম পান খাচ্ছেন | এসময়টা তার দিনের মধ্যে একটা অমূল্য সময় বলা যায় | যে পরিমাণে পান খায়,তাতে যা মনেহয় মাসে ১০০০ টাকা খরচই হয় তার পানসামগ্রীর পিছনে | যদিও তার টাকার কোন চিন্তা নেই | দরজা ঠেলে অর্নবের উকি দেয়া মাথাটা দেখে একটু বিরক্তিস্বরে বললেন,কিছু চাও? – আম্মা আমি কি ভিতরে আসব? – বাইরে দাড়াইয়া কথা বলা আমার অপছন্দ,জানোনা? অর্নব দরজাটা আগের মত চাপা দিয়ে এসে মায়ের পায়ে কয়েকবার সালাম করে হেসে দিল | – হাসো কেন,কি ঘটনা? – আম্মা আমার একটা চাকরি হইছে,তবে ততটা সুবিধার না | যেকোন সময় ছেড়ে দিতে পারি | – শুরুর আগেই ছাড়াছাড়ির কথা বলতেছ কেন,গাধা কোথাকার ! বাপের মত হইছ ! অর্নব হাসিটা এখনো থামায়নি,ভালই লাগছে হাসতে | – বোকা ছেলে,খালি হাসে | আমার এইপাশে পা উঠাইয়া ভালমত বস | কথামত অর্নব তাইই করল | মায়ের গা ঘেষে একটু আদুরে ভঙ্গিতে | – পান খাবা আব্বা? নতুন এক মশলা আনাইছি,খুব মজা | দাড়াও একবার খাও,তাইলেই মজা বুঝবা | অর্নব কেবল মাথা দুলিয়ে চলেছে | ওর খুব জানতে ইচ্ছে করছে,কতদিন পর মা ওকে ‘আব্বা’ বলে ডেকেছে | ডাকটা শুনলেনা গলা কেমন ভার হয়ে আসে | অতি আবেগেই হয়ত | – অর্নব,তোমার দু’ভাইদের খবর কি,তারা কেমন আছে? – আম্মা আপনি সারাদিন বাসায় থেকে আমাকে এই প্রশ্ন করতেছেন কেন | – তারা তো আমার সামনেই আসে না | চাকরি বাকরি,বউ পোলাপান নিয়ে ভারি ব্যস্ত | আমার কাছে আসার সময় কই? তুমিও কি বাসায় থাকো না? – আগামী ৭ দিন মানে ১ সপ্তাহ ধরে আমি বাসায় আসি নাই | কারণ এইরকম বাজারের মত বাসায় থাকতে একদম ভাল্লাগেনা | – ও,ভাল বলছ | – আম্মা আমার টিউশনি আছে,গেলাম | – পানটা খাবা না? – জ্বি দেন,খেতে খেতে যাই |
শুধুমাত্র বসার ঘরটাই এত্ত সুন্দর করে কেউ সাজাতে পারে বিশ্বাস করাই কষ্টকর | বাব্বাহ্,এইনা হল বড়লোকি বাসা | টানা কয়েক মাসেও এই রুমের উপর একটুও বিস্ময় কমেনি অর্নবের | পড়াতে এলেই মনে ওলটপালট লেগে যায় রুমের প্রতিটা বস্তু দেখে | তবে টাশকি খাওয়া কথা হল,বড়লোক সাহেবের একমাত্র সন্তান এবং মেয়ে মানে তাশফি | এই মেয়ের কথাবার্তা,চালচলন তো পুরাই উল্টা | ক্লাস টেন পড়ুয়া এই মেয়ের সাথে চললে কে বুঝবে,এযে বিরাট রাজার একমাত্র রাজকন্যা | তবে অর্নবের অতটা টাশকি খেতে হয়নি | কারণটা ওর স্বভাবের | ওর খালি ঐ জড় চাকচিক্যের প্রতিই মনোযোগ অত্যধিক | চাকচিক্যের ভেতরের জীবদের নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই |
"স্যার বসে আছেন কেন,রুমে আসেন" তাশফির ডাকে ঘোর ভাঙল অর্নবের,হ্যা আসছি | তাশফিকে দেখে অর্নব এক নিরব ঝামেলায় পড়ে গেছে | ঝামেলার কথাটা তো আর সরাসরি বলা যাবেনা,চুপ করে থাকাই নিরাপদ | তাই একে নিরব ঝামেলাই আখ্যা দিয়ে ফেলল অর্নব | আজ হঠাৎ এরকম কেন হয়ে গেল কে জানে | আসোলেই চোখ সামাল দেয়ার মত কঠিন কাজ,পৃথিবীতে খুব কমই আছে | ধ্যত্তরি যত্তসব ! – স্যার আপনার কি কিছু হয়েছে? একটু চমকে অর্নব বলল,নাহ্ কি হবে? কিছু না | ইচ্ছেকৃত হাসিটা দিতে গিয়েই ভালই ধরা খেল বেচারা | – স্যার মিথ্যা বলা মহাপাপ জানেন না? আচ্ছা,আমি বলি আপনার কি হয়েছে? – বল – আমি আজ শাড়ি পড়েছি,আপনার প্রিয় রঙের | চোখে কাজল দিয়েছি খুব যত্ন করে,এটাও আপনার পছন্দমত | আর এতে আমাকে খুব সুন্দর লাগছে তাই আপনি চোখ নামাতে পারছেন না | অর্নবের মুখ মিডিয়াম হা হয়ে গেছে | এত নরম ভাবে চরম ধরা জীবনে এই ফাস্ট | ও খোদা,এইটা কি মেয়ে না মহিলা ফেরেশতা !
২. হামিদ সাহেব রুমে ঘুরেঘুরে কথা বলছেন | একা একা,নিজের সাথে | যখন ভীষন একা মনেহয় এই পৃথিবীতে,তখনি তিনি এরকম করতে থাকেন | ফলাফল,তিনি একটু একাকিত্বের মাঝেও সান্ত্বনা খুজে পান | দরজায় খটখট শব্দ হতেই কথা থামিয়ে দিলেন | তিনি মোটামুটি অবাক আর কি | আমার কাছে কি কারো আসার কথা ছিল,কে আসবে? আরেকবার শব্দ হল,খট খট খট ! হামিদ সাহেব তড়িঘড়ি করে দরজার ছিটকিনি খুলে ফেললেন | – আব্বা কেমন আছেন? হামিদ সাহেব যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না অর্নব এসেছে | – এতদিন পর বাপের কথা মনে হল তোর | অর্নব টুপ করে ঘরের মধ্যে ঢুকে একদম সটাং হয়ে শুয়ে পড়ল বিছানায় | খুব ঘুম পাচ্ছে ওর | – কিরে বেটা অসুস্থ নাকি? – নাহ্ – তবে শুয়ে পড়লি যে? আচ্ছা শুয়ে থাক,তোর জন্য লেবু চা করে নিয়ে আসি | আজ সকালে বাজার থেকে কিনেছি,একদম টাটকা লেবু | হামিদ সাহেবের ভীষন আনন্দ লাগছে | বাড়ি ছাড়ার পর একমাত্র এই ছোট ছেলেটাই তার খোজখবর রাখে | একদম ভালমত রাখে,কি লক্ষী একটা |
চায়ের কাপে টানা দু’চুমুক দিয়ে অর্নব বলল,আব্বা আপনি না একা থেকে ভালই আছেন | আমিও আর থাকব না ভাবতেছি | – তাইলে থাকবি কই? – খালিদের বাসায় | কয়েকদিন ধরে তো ওর বাসাতেই আছি | আমার বন্ধুরা তো আর আমার মত বোকা না আব্বা | ওরা সবাই যে যার মত টাকা পয়সা কামিয়ে একদম পেটফোলা বড়লোক | – বাদ দে ! তুই যেমন আছিস খুব ভাল আছিস | সততাই সবকিছুর আগে | তারপরের কয়েকমিনিট কেটে গেল অস্বাভাবিক নিরবতায় | হামিদ সাহেব গভীর মনোযোগে ছেলেকে দেখছেন | চেহারায় কার যেন ছায়া আছে | কার হতে পারে? মরিয়মের নাকি ওর দাদির? যার মতই হোক,অর্নবটা দেখতে খুব সুন্দর হয়েছে | দেখলেই সুপুরুষত্বের তৃপ্তি এসে যায় |
৩. বসার ঘরে চোখ পড়তেই ভ্রু কুচকে গেল অর্নবের | আজ রাতে চাদঁ এর বদলে সূর্য উঠবে নাকি | ভাই-ভাবি,পোলাপান দেখি সব একখানে | মেজভাবি ওকে দেখা মাত্রই শুরু করে দিল সুপরিচিত ঘ্যানানি,এইযে টো টো বাবাজি বাইরে বাইরে কি কর সারাদিন? মদ জুয়া আর কত ! অর্নব খেপলো না,একদমই না | একটুতেই খেপার পাত্র ও নয়,বরং কেমন মজা লাগছে | – তোমার আম্মাজানকে পাওয়া যাচ্ছে না দুপুর থেকে | – হয়ত বাজারে গেছে আপকামিং পান মশলার খোজ করতে | এসে পড়বে সময়মত | – তা হলে তো হতই,কিন্তু চিঠি লিখে গেছে একটা ! – কি লিখছে? আমি বাড়ি ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে যাচ্ছি,আর আসব না | এই টাইপের? – হুম -ও,তবে আমার এসে তো কোন কাজ হল না | আম্মার কাছেই আসছিলাম,পান খেতে | হরেক মশলা দিয়ে পান,খুব খেতে ইচ্ছে করছিল | থাক,যাই | মেজভাবি রাগে কটমট করছেন,যতসব আহাম্মকের পাল্লায় পড়েছি আমি ! বাড়ির সবগুলা একেকটা আস্ত আহাম্মক !
সোফার একপাশে গুটিসুটি মেরে বসে থাকা অর্নবকে দেখছে তাশফি,অনেকক্ষন ধরে | অর্নব মাথা নামিয়ে আছে, তাশফিকে দেখতে পায়নি | তাশফির খুব,একদম ভীষনভাবে ইচ্ছে করছে এই বোকাসোকা চেহারার ছেলেটাকে অনেক আদর করতে,ইচ্ছেমত | হঠাৎ এরকম ইচ্ছে হওয়ার কারণটা ও নিজেই জানেনা,অত জানতে ইচ্ছেও হয় না | সামনে দাড়িয়ে থাকা তাশফিকে দেখে একটু ঘাবড়ে অর্নব বলল,শাড়িটা এখনো পড়ে আছো? – হুম কেন,খুব বেশি সুন্দর লাগছে? – তোমার আব্বু কোথায়? – আব্বু আসবে কোথ্থেকে,আব্বু তো বিদেশ | – ওহ সরি,ভুল হয়ে গেছে | ইয়ে মানে আম্মু… – আমার বড়খালা আজ হসপিটাল থেকে রিলিজ পেয়েছে তো তাই অফিস শেষে আম্মু তার বাসায় গেছে | আজ রাতে ফিরবে না বলেছে | – তারমানে পুরা বাড়িতে তুমি একা? – হুম | না না,কাজের মেয়েটা আছে তো | – ভালই হয়েছে,বেশি লজ্জা পেতে হবে না | – বিড়বিড় করে কি বলছেন স্যার? – তাশফি আমি দু’প্লেট ভাত খাব | বাসায় আম্মা নেই তো তাই খেতে পারিনি….আর আমার ঐ বন্ধুর বাসায় গিয়ে দেখি তালা মারা | কোথায় গেছে কে জানে | দিতে পারবে,খুব খিদে লেগেছে জানো | – এক্ষুনি আনছি | এক দৌড়ে রান্নাঘরে এসে পড়ল তাশফি | আর এক সেকেন্ড ওখানে থাকলে,স্যার চোখের পানি দেখে ফেলত | একটা মানুষ এত সরল হয় কি করে? অতিরিক্ত মায়ায় পড়লেও যে চোখে পানি এসে ভরে যায়,তা আজ প্রথম জানলো মেয়েটা |
রাস্তাটা এখনি কেমন খালি হয়ে গেছে | মানুষজন তেমন একটা নেই,আর কয়েকটা রিকশার এদিক ওদিক ছুটে চলা | পিচঢালা পথটায় মানুষ,রিকশা সবকিছুর ছায়া পড়ছে | জোছনা দিয়ে গড়া একেকটা ছায়া | আকাশে যে আজ বিশাল একটা চাদঁ,তাইতো এত জোছনা ! সেসব ছায়ার উপর নিশ্চুপ হেটে চলেছে একটা বোকাসোকা চেহারার ছেলে | ছেলেটানা একটু একটু করে ঘামছে | কারণ পাশে থাকা শাড়ি পড়া মেয়েটা তার একটা হাত শক্ত মুঠোতে ধরে আছে | যে মুঠো থেকেই ডানা ঝাপটাচ্ছে শুভ্র এক মায়াপাখি |

No comments

আপনার মুল্যবান মন্তব্য এখানে লিখতে পারেন। ধন্যবাদ।

Theme images by Storman. Powered by Blogger.