গল্পটা মধ্যবিত্তের


হাজারো ইচ্ছা চাপা দিয়ে দিব্যি সবার সাথে চলা ছেলেটিই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আড়ালে চুপিচুপি কাঁদলেও হাসি মুখে দেখা যায় সবসময়। এদের জীবন থাকে সবসময় আক্ষেপে ভরা। আক্ষেপে আক্ষেপেই কেটে যায় এদের জীবন। কখনো মন খারাপ থাকলে পরক্ষণেই মনে হয় আরে আমি তো অনেক ভালো আছি।

মধ্যবিত্তদের অধিকাংশ সময় কাটে জীবনের সাথে সংগ্রাম করে। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। যখন তারা হাপিয়ে উঠে মাঝে মাঝে খুব অভিমান হয়। 'আমাকে কেন পৃথিবীতে পাঠানো হলো, আমি কি আসতে চেয়েছিলাম'-এ ধরনের অভিমান সেইসময় জোরালো হয়ে উঠে।

মধ্যবিত্ত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেটির মাস শেষ হতে না হতেই চিন্তা শুরু হয়। পরের মাসের টাকার জন্য বাবাকে কল করতে হবে। মাসের শুরুতে বাবাকে যখন ছেলেটি কল করে ওপাশ থেকে বাবার আর বুঝতে বাকি থাকেনা ছেলের টাকা শেষ। কিন্তু যখন ছেলে টাকার কথা বলে, বাবা বলে, ‘এইতো কয়েকদিন আগে টাকা পাঠালাম এখন ই শেষ?’ তখন হয়তো একটু অভিমান কাজ করে।

বাবা এ কথা বললেও পরেরদিন ঠিকই ফোন করে বলে ‘বাবা, কোন নাম্বারে টাকা পাঠাবো?’, ‘বিকাশ নাকি রকেট?’ তখন অভিমান নিয়েই ছেলেটি বলে বিকাশে দাও। কিছুক্ষণ পরেই ছেলেটা ভাবে বাবার কাছে তো টাকা ছিলনা, পেল কোথায়? তখন নিজের অজান্তেই কয়েক চিমটি জল জমা হয় চোখের কোনায়।

ছেলে তার অনেক বড় হবে। মানুষের মত মানুষ হবে। নিজের শখ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে ছেলের আবদার পুরন করে মধ্যবিত্ত বাবাটি। বাবা ছেলের কাছে কিছু চায়না। শুধু চোখের কোনায় একটাই স্বপ্ন ছেলে অনেক বড় হবে। এভাবেই নিজের হাজার স্বপ্ন বিসর্জন দেয়া বাবা সন্তানকে আগলে রাখে মায়া, মমতা ও ভালোবাসার বন্ধনে।

তারপরেও, বেঁচে থাকে মধ্যবিত্ত স্বপ্নগুলো, যদি কখনো পূরন হয়ে যায়- এই আশায় আশায়!

No comments

আপনার মুল্যবান মন্তব্য এখানে লিখতে পারেন। ধন্যবাদ।

Theme images by Storman. Powered by Blogger.