একজন চন্দ্রাবতী
এইযে, তোমার ক্যানভাস। রাখলাম তোমার সামনে। এইবার তোমার লিপস্টিক মাখা ঠোটের তুলিতে ইচ্ছেমত তৈরী কর তোমার শিল্পকর্ম।
_ আমি যে রংতুলির সম্পর্কটাকে বড্ড ভয় পাই। যদি কখনো রং শেষ হয়ে যায়, তুমি কি তোমার সাদা ক্যানভাস নিয়ে এই রংহীন তুলির খোজে আসবে?
_ আমার ক্যানভাসটা ভিন্ন জাতের। সব তুলির রং যে এই ক্যানভাসে আঁকতে পারে না। রং ছাড়া তোমার ওই তুলিই এই ক্যানভাসে দারুন জলচিত্র আঁকতে পারে। তুমি এমনি এক চিত্রশিল্পী চিত্র একে কখনোই ক্যানভাসটার দিকে তাকালেনা।
_ যদি কখনো তুলিটা হারিয়ে যায়?
_সেদিন হয়তো তুলির খোজ করতে গিয়ে এই ক্যানভাস ও হারিয়ে যাবে মহাশূন্যের অতল গহব্বরে।
আমি তুলিটার একটা নাম দিতে চাই।
_কি?
_মেয়ে চাঁদ
_মেয়ে চাঁদ? এত কিছু থাকতে মেয়ে চাঁদ কেন?
_শুক্লপক্ষের দিনগুলোতে ধরনীর প্রতিটিরাত দেখেছ? চাঁদ অল্প অল্প করে আলোর রং বাড়িয়ে প্রতিটা রাতের মায়া কেমন বাড়াতে থাকে। মনে হয় প্রতিটা রাতই নতুন নতুন চিত্রকর্ম। যে চিত্র কোটি বছরের ভালোবাসার একই মাত্রা ব্যাখ্যা করে। আবার কৃষ্ণপক্ষে আস্তে আস্তে ছোট হতে হতে হাঁরিয়ে যায়। আমাবশ্যার রাতে পৃথিবীর কোন রং থাকেনা। চাদকেও হতে হয় রংহীন।এসব হলো পৃথিবীর প্রতি চাঁদের ভালোবাসার মাত্রা। তাই তুমি মেয়ে চাঁদ। চাঁদের ন্যয় চন্দ্রাবতী।
আর আমি এক রংহীন সুবিশাল পৃথিবী। কোন এক মহাশূন্যের মহাদূর্যোগে দুজনে একসাথে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায় আছি।
_বিলীন শব্দটা শুনলেই কেমন বুকের মধ্যে ধক করে ওঠে। পৃথিবীর এখন মহাদূর্যোগ। চারিদিকে মহামারী। মানুষ মরছে। তুমি আমিও দূরে চলে যাব। আবার কি দেখা হবে?
_শেষদিনটায় রংহীন পৃথিবীর বুকে চাঁদটা খসে পরুক।
_তুমি আমায় চন্দ্রাবতীই ডেকো।
No comments
আপনার মুল্যবান মন্তব্য এখানে লিখতে পারেন। ধন্যবাদ।